সাধের সংসার। পর্ব- ০৯
সারাদিন ঘুরাঘুরি করে খাওয়া করে মার্কেট করে রাতে তারা বাড়ি ফিরলো।
নুসরাতের সে কি খুশি তার খুশি দেখে কে।
এসেই দাদুর কোলে উঠলো সারাদিন দাদুর কোলে একবারও উঠতে পারে নাই।
নুসরাতের কথা মত বাড়ি পাকা করলো। নুসরাত যা খেতে চায় তাই এনে দেয়,
যা পড়তে চায় তাই এনে দেয়। নুসরাতের সব চাহিদা ইচ্ছে সবাই পূরণ করে দেয়।
এমন কি ঈশিতা কলেজ থেকে ফেরার পথে
আচার চানাচুর ঝালমুড়ি কেক বড়ই আইসক্রিম চকলেট যা যা পায় তাই তাই নিয়ে আসে।
দেখতে দেখতে আরো দুবছর কেটে গেলো।
যুগের তালে তালে তারাও কম বেশি আধুনিকতার ছোঁয়া পেতে শুরু করলো।
রিপাঃ এই যে নুসরাতের বাবাই একটু এদিকে আসো তোমার সাথে আমার কথা আছে।
ইমরানঃ তোমার কাছেই তো আছি কি বলবে বলো(রিপা কে জরিয়ে ধরে)
রিপাঃ বলছি কি মেয়ে তো বড় হলো এবার তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেই কি বলো।
ইমরানঃ কেনো তুমি আর ঈশিতা কি আর পড়াতে পারতেছো না?
রিপাঃ আরে বাবা সেটা কথা নয়,
আমরা দুজনেই তো পড়াই কিন্তু নুসরাত কে তো এখন স্কুলে দিতে হবে নাকি?
তাছাড়া ঈশিতা ইন্টার পাশ করে শহরের সরকারি কলেজে পড়তেছে।
আমিও বাড়ির নানা রকম কাজে থেকে তেমন তো পড়াতে পারতেছি না।
তাছাড়া তোমার মেয়ে সারাদিন খেলা খেলা নিয়ে ব্যস্ত।
ইমরানঃ থাক আর বলতে হবে না।
আমিও তো চাই আমার মা টা মানুষের মত মানুষ হোক।
এতদিন তোমরা দুজন পড়িয়েছো তাই তো আমি স্কুলে ভর্তি করে দেই নাই।
বলো কোথায় আমার মাকে ভর্তি করাতে চাও?
রিপাঃ আল্লাহ দিলে আমাদের টাকা পয়সা সম্পদের অভাব নাই।
মেয়েও যেহেতু আমাদের তাই আমি বলতেছিলাম কি,
আমাদের গ্রামের পরেই তো শহর তাই শহরের কোন ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে।
ইমরানঃ সেটা না হয় বুঝলাম
কিন্তু আমার মা টা যে ছোট মানুষ সে কেমন করে একাই শহরে যাবে শুনি?
রিপাঃ আরে ঈশিতাও তো শহরে পড়ে, আর আমিও তো বাড়িতে একা থাকি।
যেদিন ঈশিতা যাবে সেদিন ঈশিতা সাথে নিয়ে যাবে আবার সাথে নিয়ে আসবে।
আর ঈশিতার যেদিন বেশি ক্লাস থাকবে সেদিন আমি গিয়ে নিয়ে আসবো।
আর এটাও করতে পারি ঈশিতা নিয়ে গেলো আমি বাড়ির সব কাজ সেরে আনতে গেলাম
তাহলে তো হয়েই গেলো।
ইমরানঃ তাহলে আমার কোন আপত্তি নাই।
কিন্তু আমার মা কে একা একা কোথাও যেতে দিবো না।
রিপাঃ নুসরাত কি একা তোমার সন্তান আমার কি না।
নুসরাত কে কি তুমি একাই ভালোবাসো আমি কি বাসি না?
নুসরাত কে নিয়ে খালি তোমার ভয় আমার বুঝি ভয় নাই।
ইমরানঃ এভাবে মন খারাপ করে বলো কেনো? আমি একবারও না করেছি নাকি।
আমিও তো চাই আমাদের সন্তান সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক।
কিন্তু ছোট মানুষ তাছাড়া শহর একা একা কি কেউ দিতে চাইবে?
রিপাঃ সেটা তো বুঝেছি। আমি আর ঈশিতা আছি না কোন সমস্যা নাই।
তাছাড়া তুমি আছো আব্বা আছে যে কেউ তো যেতেই পারবো নুসরাত কে সাথে নিয়ে।
ইমরানঃ তা আমার মামনি টা কি করতেছে কোথাও দেখতেছি না যে।
রিপাঃ ঈশিতা সাথে নিয়ে গেছে নুসরাত কে।
ইমরানঃ কোথায় নিয়ে গেছে?
রিপাঃ ঈশিতার স্কুলের বান্ধবীর বিয়ে সেখানে দাওয়াত খেতে গেছে
তাই নুসরাত কে সাথে নিয়ে গেছে।
ইমরানঃ আমি তাহলে ক্ষেতে গেলাম, দুপুরে খাবার নিয়ে যেও।
আব্বা তো মনে হয় সকালে না খেয়ে গেছে।
রিপাঃ তুমি যাও আমি সব কাজ শেষ করে সময় মত খাবার নিয়ে পৌঁছে যাবো।
ইমরান কাজে চলে গেলো, রিপাও বাড়ির কাজ করতে লাগলো।
বাড়ির কাজ শেষে রিপা খাবার নিয়ে গেলো।
সন্ধ্যার মধ্যে ঈশিতা নুসরাত কে নিয়ে বাড়ি চলে আসলো।
রাতে খাবার টেবিলে নুসরাতের কথাটা উঠলো
ইমরানঃ আব্বা নুসরাত মামনি কে শহরের স্কুলে ভর্তি করাতে চাই।
ইমরানের আব্বাঃ সেটা তো কথা কিন্তু,
শহরে নুসরাত দাদুভাই একা একা( আর বলতে দিলো না)
রিপাঃ আব্বা আমি আর ঈশিতা আছি না, ঈশিতা তো প্রতিদিন সকালে কলেজে যায়।
ঈশিতা নিয়ে যাবে আর আমি আসার সময় নিয়ে আসবো।
তাছাড়া আপনারা তো আছেন, যেদিন ফ্রী থাকবেন সেদিন আপনি বা আপনার ছেলে যাবেন।
ইমরানের আব্বাঃ বউমা তোমার মাথায় যে সত্যি খুব ভালো ভালো বুদ্ধি আছে সেটা মানতে হবে।
আমার ছেলে যদি তোমাকে বাদে অন্য কাউকে বিয়ে করতো
তাহলে সব রোষানলে চলে যেত।
ঈশিতাঃ ঠিক বলেছো আব্বা, ভাবি কিন্তু এক হাতে সব সামাল দিয়েছে।
ভাবি শুধু বুদ্ধিমান সাথে শিক্ষিত।
ইমরানঃ ওই তুই থাম, আমি কি আমার সন্তানের ভালো চাই না এটা বলতে চাস।
ঈশিতাঃ দাদা ভাই রাগ করো কেনো,
ভাবি এ বাড়িতে আসার পর কি কি হয়েছে সবার কি পরিবর্তন করছে
এমন কি তুই তোর দিকে তাকা।
সারাদিন তো লুঙ্গি পড়ে থাকতি এখন দেখ তোকে কেমন হ্যান্ডসাম বানিয়ে দিয়েছে।
আর ভাবি কিন্তু সব তার বুদ্ধি দিয়ে এ সংসার টা কত দূরে নিয়ে গেছে।
রিপাঃ ঈশিতা এটা তোমার ভুল ধারনা। শুধু বুদ্ধি থাকলে হবে না সাথে শ্রমও লাগবে।
যেই শ্রম টা আব্বা আর তোমার দাদা ভাই করেছে।
ওনারা যে রকম পরিশ্রম করে এরকম পরিশ্রম এই গ্রামের আর কাউকে করতে দেখি নাই।
আর বুদ্ধির কথা বলো, বুদ্ধি সবার থাকে কম আর বেশি।
তাছাড়া এই সংসার টা আমার সেহেতু সংসারের ভালো মন্দ দেখার দায়িত্বও আমার।
আজ যদি আমার শ্বাশুড়ি বেঁচে থাকতো তাহলে তিনিও তার সংসারের জন্য সব করতেন।
ইমরানের আব্বাঃ এটা একবারে খাঁটি কথা বলেছে বউমা।
আর বউমা তুমি আসার পর আর নুসরাত হবার পর সংসারের
কিন্তু উন্নতি হয়েছে এটাও তোমাকে মানতে হবে।
ঈশিতাঃ হ্যাঁ আব্বা ভাবি এসে দেখেছো কিভাবে চাষ করে
আবাদ করার পর টাকা গুলো দিয়ে অন্য ধানি জমি আর সবজির জমি গুলো কিনেছো তোমরা।
ইমরানের আব্বাঃ সেটাই তো বলতেছি অন্য কেউ হলে সেটা নাও হতে পারতো।
ইমরানঃ এখন ওসব বাদ আগে আমার মায়ের কাছে শুনি সে কি শহরে পড়তে গেলে খুশি হবে।
নুসরাতঃ বাবাই আমিও আন্টির মত শহরে পড়বো(হে হেহে)
ঈশিতাঃ শহরের স্কুলে ভর্তি হলে
কিন্তু পড়তে হবে কোন দুষ্টুমি করা যাবে না আর সারাদিন খেলা করা যাবে না।
নুসরাতঃ আমি তো পড়ি তোমরা তো পড়াও,
শহরে তোমার পড়তে পারলে আমি আরো বেশি বেশি পড়বো।
ইমরানঃ কে বলেছে আমার মা টা পড়ে না আমার মা টা খুব পড়ে।
আমি আমার মায়ের জন্য আরো খেলনা এনে দিবো খেলাও করবে পড়াও পড়বে।
নুসরাতঃ কি মজা কি মজা বাবাই আমাকে আরো খেলনা এনে দিবে(উম্মাহ বাবাই)
ইমরানঃ আমার লক্ষি মা টা(উম্মাহ) শহরে পড়লে কিন্তু কারো সাথে দুষ্টুমি করতে পারবে না কেমন মামনি?
নুসরাতঃ আচ্ছা বাবাই কারো সাথে দুষ্টুমি করবো না।
রিপাঃ এখন সব কথা বাদ কালকে সোনামণি মাটাকে নিয়ে স্কুলে ভর্তি করাবো।
এখন সবাই খাওয়া করো খাওয়ার সময় বেশি কথা বলতে নেই।
সবাই আনন্দ সহকারে রাতে খাবার খেলো। ঈশিতা খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে গেলো,
এখনও তার অনেক পড়া বাকি আছে।
ইমরানের আব্বা খেয়ে নুসরাত কে নিয়ে তার রুমে গেলো।
নুসরাত তার দাদুর সাথে আর ঈশিতার সাথে রাতে থাকে এখন।
ইমরানও খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
রিপা রাতের বাকি কাজ গুলো শেষ করে ফ্রেশ হয়ে রুমে গেলো।
গিয়ে ইমরানের বুকে শুয়ে পড়লো।
ইমরানও রিপার এলোমেলো চুল গুলো হাতের আঙুল দিয়ে ঠিক করে দিতে লাগলো।
রিপাঃ যাইহোক অবশেষে একটু শান্তি পেলাম। মেয়েটা স্কুলে ভর্তি হচ্ছে তাহলে।
আমার তো ভয় করতেছিলো কখন জানি নুসরাত না করে বসে।
ইমরানঃ আরে না করবে কেনো তাছাড়া ঈশিতা তো আছেই।
ঈশিতা এমনিতেই রাজি করাতে পারতো নুসরাত কে।
রিপাঃ তাহলে এখন ঘুমাই সকালে আবার তোমার মেয়ে কে নিয়ে স্কুলে ভর্তি করাতে যেতে হবে।
ইমরানঃ সকাল হতে অনেক বাকি আছে চলো আজকেও আদর করি তোমাকে।
রিপাঃ ছি এভাবে বলতে হয় পাঠক পাঠিকা তো খারাপ ভাববে।
ইমরানঃ তাহলে কি করে বলতে হবে শুনি?
রিপাঃ বলবে আসো লুডু খেলি ফুটবল খেলি ভলিবল খেলি।(হা হা হা হা)
ইমরানঃ তাহলে দেরি কেনো চলো শুরু করি।
দুজনে কিছু সময় আনন্দ মুখর সময় কাটালো। রিপা নিজের কাপড় ঠিক করতে লাগলো। ইমরান আবারো রিপাকে টেনে বুকে নিলো
রিপাঃ কি হলো মন ভরে নাই, নাকি আরো চাও।
ইমরানঃ সেটা তো সারাজীবন চাই।
আমি বলতে চাই কি আমরা আর একটা সন্তান নেই।
আমাদের তো মেয়ে আছে এবার একটা ছেলে সন্তান নেই।
রিপাঃ এখন না বর বাবু(নাক টিপে) আগে মেয়েটা পড়াশোনা শুরু করুক তারপর না হয় নিবো।
ইমরানঃ এখন নিলে কি সমস্যা, এখন তো আর আমি ক্ষেতে বেশি যাই না।
সব সময় তোমাকে সময় দিতে পারবো।
রিপাঃ সেটা নয়, আগে মেয়েটার নতুন জীবন শুরু হোক তারপর নিবো।
এত তারাহুরোর কি আছে আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি?
ইমরানঃ তুমি যা ভালো বুঝো তাই হবে। কিন্তু এবার একটা ছেলে বাবু চাই।
দুটি সন্তান সুখের সংসার। ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানের বেশি নয়।
রিপাঃ আমার পাগল বর টা তুমি সত্যি একজন সত আর সরল মানুষ।
ইমরানঃ তুমিও অনেক ভালো একটা বউ যা সবার নসীবে থাকে না।
রিপাঃ হইছে এখন আসো তো আমি তোমাকে আদর করে ঘুম পারিয়ে দেই।
তারপর দুজনে আবারো ভালোবাসায় ডুব দিলো।
একজন আর একজন কে খুব ভালোবাসে। দুজনে ঘুমিয়ে গেলো।
পরেরদিন রিপা ঈশিতা ইমরান শহরে গিয়ে নুসরাত কে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলো।
ভর্তি করিয়ে দেওয়া হলে
তারা সবাই শহরের অনেক জায়গায় ঘুরলো খাওয়া করলো তারপর বাড়ি ফিরে এলো।
ইমরানের আব্বাঃ বউমা আমার দাদু কে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছো তো নাকি?
রিপাঃ হ্যাঁ আব্বা ভর্তি করেছি।
ইমরানের আব্বাঃ তাহলে আর কোন কিছু করার নাই তো।
রিপাঃ আব্বা একদিন গিয়ে বই আর স্কুল ড্রেস নিয়ে আসতে হবে ওখান থেকে।
তারপর আপনার নাতনী প্রতিদিন স্কুলে যাবে।
ইমরানের আব্বাঃ তাহলে তো ভালোই হলো।
এখন যাও রাতের রান্না করো সবাই একসাথে খাবো।
রিপাঃ হ্যাঁ আব্বা আমি যাচ্ছি।
ইমরানঃ আমি একটু পুকুরের মাছ গুলো কে খেতে দিতে গেলাম।
ঈশিতা নুসরাত কে তোর কাছে রাখ।
রিপাঃ আচ্ছা যাও তুমি।
ঈশিতাঃ দাদা ভাই ঠিক আছে।
এভাবে দিনের পর দিন যেতে লাগলো।
নুসরাত প্রতিদিন ঈশিতার সাথে স্কুলে যায়
আর আসার সময় রিপা হোক ইমরান হোক কিংবা ইমরানের তারা নিয়ে আসে।
এভাবে আরো এক বছর কেটে গেলো।
নুসরাত এখন ১ম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হলো।
অবাক করার বিষয় হলো দ্বিতীয় শ্রেণীতে নুসরাতের ১ রোল হলো।
রিপাঃ দেখেছো আমাদের মেয়ে কত মেধাবী
শহরের সব বাচ্চা গুলো কে পিছনে ফেলে ১ রোল করলো।
ইমরানঃ সব আল্লাহর ইচ্ছে।
তাছাড়া তুমি আর ঈশিতা তো কম পড়াও নাই আমার মা কে।
রিপাঃ কিন্তু এভাবে আমি আর ঈশিতা পড়ালে কি চলবে বলো।
তোমার মেয়ে তো আমাদের কাছে পড়তে চায় না।
ইমরানঃ ছোট মানুষ আমার মা টা একটু বুঝিয়ে পড়িও তাকে।
দেখবে এমনি পড়বে তোমাদের কাছে।
রিপাঃ তবুও তোমার মেয়ে যেরকম। সারাদিন দাদু দাদু করে আর খেলা নিয়ে পড়ে থাকে।
ইমরানঃ যাই করুক পড়াশোনা তো ঠিক আছে।
যখন দেখবে এক বারে পড়তে চাচ্ছে না তোমাদের কাছে তখন একটা ব্যবস্থা করা যাবে।
রিপাঃ সেটাই দেখি কি করে এ বছর নুসরাত।
তবে আমাদের মেয়ে কিন্তু সব কথা শুনে। অন্য বাচ্চাদের মত অত জেদি রাগী না।
ইমরানঃ দেখতে হবে না মেয়েটা কার।
রিপাঃ মেয়ে তোমার একার না মেয়েটা কিন্তু আমারও।
আমি বলবো এই কথা টা দেখতে হবে না মেয়েটা কার
ইমরানঃ আচ্ছা হয়েছে আমাদের দুজনের এবার ঠিক আছে তো নাকি।
আমি বলি কি চলো আর একটা বাচ্চা নেই তাহলে দুজন দুজন কে নিতে পারবো
তখন বলবো এটা তোমার ওটা আমার।
রিপাঃ শখ কত তার এখন ওসব হবে না যা হবার পরে হবে বুঝলে বর টা আমার।
ইমরানঃ ধুর এমন করো কেনো তুমি। আর একটা বাচ্চা নিলে আর নিবো না।
রিপাঃ আমার অনেক গুলো বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছে (মুখ লুকিয়ে) তবে এখন আপাতো নিবো না কিছু দিন যাক তারপর নিবো। (লজ্জা ভাব করে)
ইমরানঃ যেমনটা ইচ্ছে আমার বউটার।
২য় শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নুসরাতের পড়াশোনা দিন দিন খারাপ হতে লাগলো।
তাছাড়া ২য় শ্রেণীতে অনেক গুলো বই যার কোন পড়াই নুসরাত নাকি বুঝে না।
নুসরাতের পড়াশোনা খারাপ হবার কারনে রিপা আর ইমরান কে প্রধান শিক্ষক ডাক দিলো।
শিক্ষকঃ আপনারা নুসরাতের মা বাবা তাই না।
দুজনেঃ জ্বি নুসরাত আমাদের মেয়ে।
শিক্ষকঃ আপনাদের মেয়ে তো আগে পড়াশোনা ড্রয়িং করা সব কিছুতেই সবার চেয়ে এগিয়ে ছিলো।
কিন্তু হঠাৎ করে কি হলো শুনি নুসরাত সব কিছুতেই পিছিয়ে পড়তেছে।
রিপাঃ স্যার আমরা তো বাড়িতে তাকে পড়াই এমন কি সে তো বাড়িতে আমাদের কাছে পড়তেও বসে আর পড়াও পায়।
ইমরানঃ স্যার নুসরাত পড়াশোনা তো খুব ভালো করে। প্রতিদিন আমাকে ছড়া কবিতা শুনায় হাতের আঙুলে হিসাব করে দেয়।
শিক্ষকঃ দেখেন যদি সে পারতো তাহলে কি আপনাদের কে ডেকে নিয়ে আসতাম।
তাছাড়া এই যে নুসরাতের পরিক্ষার খাতার নাম্বার গুলো দেখুন তাহলে বুঝতে পারবেন।
রিপা মনোযোগ দিয়ে সব কিছু দেখলো আসলেই তো নুসরাত সঠিক উত্তরের জায়গায় ভুল উত্তর লিখেছে। নুসরাত অবশ্য পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো,
রিপা একবার নুসরাতের দিকে একবার খাতার দিকে দেখতেছে।
রিপার রাগ দেখে নুসরাত ভয় পেয়ে গেলো।
রিপাঃ স্যার এরপর আর এমন হবে না।
আমি কথা দিতেছি নুসরাত এখন থেকে ভালো করে পড়াশোনা করবে।
শিক্ষকঃ বাসায় গিয়ে রাগ দেখাবেন না,
ছোট মানুষ বুঝিয়ে বলবেন কেমন।
তাছাড়া এটা আমাদের দায়িত্ব প্রত্যেক টা অভিভাবক কে তাদের সন্তানের বিষয়ে জানানো।
রিপাঃ আচ্ছা স্যার ঠিক আছে। এবার তাহলে আমরা আসি।
স্কুল থেকে তারা বাড়ি ফিরে আসলো।
রিপার রাগী চেহারা দেখে নুসরাত দাদুর পিছনে লুকালো।
নুসরাত খুব ভয় পেয়ে আছে এ না তাকে তার আম্মু মারে।
আসলে সব বাবা মাই একটু রাগ হয় এরকম যদি কেউ করে না
মানে ভালো ছাত্রী থেকে রেজাল্ট খারাপ।
রিপার রাগের কারন ইমরানের আব্বা বুঝতে পারলো না।
চলবে কি...