সাধের সংসার । পর্ব - ১০


ইমরানের আব্বা নুসরাত কে কোলে তুলে নিলো।
কোলে উঠেই নুসরাত মাথা লুকালো ইমরানের আব্বার কাঁধে।
এটা দেখে অবশ্য রিপার আরো রাগ উঠে গেলো।
ইমরানের আব্বাঃ কি বউমা আমার দাদুমনি কে এভাবে রাগ দেখাচ্ছো কেনো?
রিপাঃ আব্বা আপনার আদরের নাতনী পড়াশোনা করতে পারে না।
আজকে প্রধান শিক্ষক ওর নামে নালিশ করলো।
ইমরানের আব্বাঃ ও একটু আধটু নালিশ করবেই বউমা তার জন্য কি রাগ দেখাতে হবে।
তাছাড়া আমার দাদুমনি তো ক্লাসের ১ রোলের ছাত্রী।
রিপাঃ আব্বা আপনি বুঝতেছেন না।
আপনার নাতনী এখন একেবারে পড়াশোনায় পারে না।
এমন কি ১ম সাময়িক পরিক্ষায় ফেল করেছে। এখন আপনি বলেন কি করবো ওকে।
ইমরানের আব্বাঃ কি দাদাভাই তুমি নাকি পড়াশোনা পারো না।
কেনো তুমি পড়াশোনা কি করো না।
নুসরাতঃ আমি পারি তো কিন্তু ভুলে যাই।
বাড়িতে আন্টি আর আম্মু যেমন করে পড়ায় তেমন করে স্কুলে পড়া নেয় না
আর তেমন করে শেখায় না। বাড়ির আর স্কুলের পড়া গুলো আলাদা আলাদা লাগে।
ইমরানের আব্বাঃ এবার বুঝেছো তো বউমা।
রিপাঃ এই কথাটা আগে বললে কি হতো,
তাহলে কি আজকে ওর নামে নালিশ শুনা লাগতো।
ইমরানঃ তাহলে কি করতে চাও এখন তুমি?

রিপাঃ তোমাকে তো আগেই বলেছি আমাদের পড়া দিয়ে নুসরাতের হবে না।
তুমি তো তখন আমার কথা শুনলে না। এবার ওর জন্য একজন শিক্ষক রাখবো,
অন্য কেউ পড়ালে দেখবে ঠিকই পড়বে আর ঠিকে বুঝিয়ে দিতে পারবে।
ইমরানঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি বলি কি আমাদের এখানে তো অনেক ছেলে আছে যারা প্রাইভেট পড়ায় 
তাদের একজন কে রেখে দেই।
রিপাঃ দেখো তারা রাজি হয় কি না। আমিও দেখি কাউকে পাই কি না।
নুসরাতের বন্ধু বান্ধবীর মায়েদের সাথে আমার পরিচয় আছে তাদের বলে দেখি
তারা যদি কারো সন্ধান দিতে পারে।
ইমরানঃ হ্যাঁ হ্যাঁ তাও হতে পারে, তোমার মেয়েও যখন বললো বুঝে না।
ওখানকার কাউকে পেলে ভালোই হবে।
রিপাঃ ঈশিতাও পড়াতে পারতো, কিন্তু ঈশিতা শাসন করতে পারবে না।
তাছাড়া ঈশিতারও পড়াশোনার চাপ বেড়ে গেছে।
তাই বাইরের কেউ হলে দেখবে তোমার মেয়ে আগের মত সব কিছু পারবে।
আমরা পড়ালে পড়তেও চায় আমরা শাসন করতেও পারি না।
আমাদের কে তো ভয়ও করে না।

ইমরানঃ দেখো রাগি কোন মাষ্টার আবার এনো না।
আমি কিন্তু আমার মাকে খুব ভালোবাসি। আমার মায়ের যাতে কোন কষ্ট না হয় না।
রিপাঃ আরে নুসরাত তো আমারও মেয়ে আমিও চাই না আমার মেয়েকে কেউ মারুক রাগ দেখাক। কিন্তু ওর ভালোর জন্য কড়া একটা মাষ্টার লাগবে।
ইমরানের আব্বাঃ যেহেতু বাড়িতে এসে পড়াবে সেহেতু কোন সমস্যা নাই।
এর মাঝে ঈশিতাও চলে আসলো কলেজ থেকে।
সবার কথা শুনতে না পেলেও ভাবি আর বাবার কথা টা শুনতে পেরেছে।
ঈশিতাঃ ভাবি কিসের মাষ্টার আর কিসের রাগ। আর মাষ্টার কার জন্য লাগবে শুনি।
রিপাঃ তোমার মা পড়াশোনায় এখন ডাব্বা স্কুলের পরিক্ষায় ফেল আমাদের পড়া আর স্কুলের পড়া নাকি তার কাছে মেলে না। তাই তোমার মায়ের জন্য একটা প্রাইভেট পড়ানোর মাষ্টার খুঁজা লাগবে।
ঈশিতাঃ মাষ্টার কেনো লাগবে ভাবি? আমি তো আছি আমি পড়াবো আমার মা কে?
রিপাঃ তুমি চাইলেও শাসন করতে পারবে না, 
তাছাড়া তোমার কাছে পড়লে দুষ্টুমি করবে।

এমনিতেও তোমার নিজের পড়াশোনা আছে আবার আমাকে কাজে সাহায্য করো নিজেও তো টিউশন পড়ো তাই তোমাকে চাপ দিতে চাই না।
ইমরানের আব্বাঃ বউমা ঠিক বলেছে ঈশিতা।
আমার যা কিছু আছে সব তো তোমাদের জন্য। একটা মাষ্টার আর কতই বা নিবে বেতন।
ঈশিতাঃ কিন্তু আব্বা অন্য মাষ্টার যদি মামনির গায়ে হাত তুলে।
রিপাঃ ওমন কাউকে রাখবোই না আমি। আমিও তো আমার মেয়ে কে ভালোবাসি তার ভালো টাও চাই।
ঈশিতাঃ দাদা ভাই তুই কি বলিস।
ইমরানঃ মন খারাপ করিস কেনো। আমরা তো সবাই বাড়িতেই আছি আর বাড়িতেই থাকবো।
তোর নিজেরও পড়াশোনা আছে বোন।
এত টেনশন নিলে হবে তুইও তো অন্য মাষ্টারের কাছে প্রাইভেট পড়েছিস
কেউ তো তোর গায়ে হাত তুলে নাই।

ঈশিতাঃ আচ্ছা ঠিক আছে সবার যখন মত মাষ্টার রাখার আমারও কোন আপত্তি নাই।
প্রতিদিন রিপা নুসরাত কে আনার জন্য স্কুলে গেলে সেখানে থাকা আরো অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন রিপা। কিন্তু তেমন কোন মাষ্টার পান না যারা গ্রামে এসে নুসরাত কে পড়াবে। রিপা অবশ্য বলেছে বেতন বাড়িয়ে দিবে তবুও কাউকে পেলো না রিপা।
এভাবে আরো কিছুদিন গেলো, 
একদিন ঈশিতা কলেজে না যাওয়ার কারনে রিপা নুসরাত নিয়ে গেলো।
রিপা বর্তমানে একটু হতাশ হয়ে থাকে কারন তার মেয়ে কে পড়ানোর জন্য একটা শিক্ষক পাচ্ছে না। তো হঠাৎ নুসরাতের এক ক্লাস শিক্ষক রিপা কে দেখতে পেলো এবং দেখলো মন খারাপ করে আছে। তাই তিনি নিজেই এগিয়ে এলেন রিপার কাছে।
শিক্ষকঃ আপনি নুসরাতের আম্মু মনে হয় তাই না।
রিপাঃ হ্যাঁ আমি নুসরাতের আম্মু কিন্তু আপনি চিনলেন কি করে?

শিক্ষকঃ আপনাকে তো প্রায় দেখি নুসরাত কে নিয়ে যেতে।
তাছাড়া নুসরাত জিজ্ঞেস করেছিলাম কি হন তার তখন সে বলেছিলো তার আম্মু হন।
আপনার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু আপনি তো এসেই নুসরাত কে নিয়ে যান।
রিপাঃ আমি জানি নুসরাত পড়াশোনায় এখন দুর্বল তা আপনাকে বলতে হবে না।
শিক্ষকঃ আরে না না ওসব কিছু না। এবার বলেন এভাবে মন খারাপ করে আছেন কেনো?
রিপাঃ আসলে নুসরাত পড়াশোনায় তেমন ভালো করতেছে না।
ওর জন্য একজন শিক্ষক খুঁজতেছি পাচ্ছি না
শিক্ষকঃ ও হো এই ব্যপার এত টেনশন করবেন না।
আসেন সামনের ওই চায়ের দোকানে বসি চা খাই।
রিপাঃ না না চা খাবো না এমনি ঠিক আছি।
শিক্ষকঃ আরে আসেন তো আপনি, 
আপনার মত এত সুন্দর একজন এভাবে থাকবে তা হতে পারে না।
রিপাঃ কি যে বলেন না(লজ্জা পেলো)
শিক্ষকঃ আপনি মনে হয় আয়না দেখেন না তাই বিশ্বাস করলেন না।
আসেন চা খাই আপনার সমস্যার সমাধান আমি দিতেছি।
রিপাঃ সত্যি আপনি পারবেন নুসরাতের জন্য শিক্ষক দেখতে।

শিক্ষকঃ আগে চলেন তো তারপর দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে। আপনার মত সুন্দর মেয়ে কে টেনশন করা মানায় না আর আপনাকে এমন হতাশ দেখতেও ভালো লাগে না।
রিপাঃ আপনি তো দেখি খুব সুন্দর কথা বলতে জানেন। আর আমি কিন্তু মেয়ে না এখন মহিলা এক বাচ্চার মা। আর আপনি যেভাবে বলছেন আমি অতটাও সুন্দর না।( হেসে)
শিক্ষকঃ আসেন আগে ওই দোকানে গিয়ে বসি স্কুল ছুটি হতে অনেক সময় আছে।
রিপাও নুসরাতের ক্লাস শিক্ষকের সাথে চা খেতে দোকানে গেলো। দুজনে একটা টেবিলে দুদিকে মুখোমুখি হয়ে বসলো। শিক্ষক টা চায়ের অর্ডার দিলো।
শিক্ষকঃ এবার বলেন তো কি সমস্যা আর কি করতে হবে?
রিপাঃ বললাম তো নুসরাত পড়াশোনায় প্রচুর দুর্বল হয়ে গেছে একজন শিক্ষক লাগবে। কিন্তু এত খোঁজ করার পরও পেলাম না যাদের পাচ্ছি তারা আবার গ্রামে গিয়ে পড়াতে চায় না।
শিক্ষকঃতাহলে আপনারা গ্রামে থাকেন। আপনাদের পরিবারে কে কে আছে শুনি।
রিপাঃ আমি আমার স্বামী শ্বশুর আর ননদ আছে।
শিক্ষকঃ আরে আবার দেখি মন খারাপ করে কথা বলতেছেন। বললাম না আপনার মত সুন্দরী কে মন খারাপ করা মানায় না।

রিপাঃ ধ্যাত কি যে বলেন না( লজ্জা পেলো) আর মন খারাপ না করে কি করবো। এখন পর্যন্ত আমার মেয়ে কে পড়ানোর জন্য কাউকে তো পেলাম না। বেতন বাড়িয়ে দিতে চাইছি তবুও পাই নাই।
শিক্ষকঃ আচ্ছা আমি পড়াবো আপনার মেয়ে কে কিন্তু আমার কয়েকটা শর্ত আছে।
শিক্ষকের কথা শুনে রিপার মুখে এবার হাসি ফুটলো।
রিপাঃ বলেন বলেন আপনার শর্ত মানতে রাজি আছি আমি। কি কি শর্ত আপনার সেটা বলেন আগে।( উত্তেজিত হয়ে)
শিক্ষকঃ প্রথম শর্ত হলো আপনাকে এভাবে মন খারাপ করে রাখা যাবে না। দুই আমি মাসে ১৫ দিন পড়াতে যাবো। তিন আপনাকে একটা স্মার্ট ফোন কিনতে হবে, কারন নুসরাত কে তো আর ফোনে পড়া কিংবা অংক পরিক্ষার বিষয়ে বুঝাতে পারবো না আপনাকে বলবো আপনি বলে দিবেন। আর শেষ যেটা শর্ত সেটা হলো নুসরাতের পড়ানোর রুম আলাদা হতে হবে যেখানে একমাত্র আপনি অভিভাক ছাড়া কেউ যেতে পারবো না এমন কি নুসরাত কে পড়ানোর সময় কেউ ডিস্টার্ব করতে পারবে না।
রিপাঃ এসব শর্ত আমি মানতে রাজি আছি কোন সমস্যা নাই।
এবার বলেন বেতন কতো দিতে হবে আপনাকে?
শিক্ষকঃ বেতন লাগবে না।

রিপাঃ এটা কেমন কথা বেতন ছাড়া পড়ালে বাড়ির লোক কি বলবে আর আপনার পরিবার আছে তাছাড়া এখান থেকে তো যাতায়াত একটা খরচ আছে।
শিক্ষকঃ এমনিতেও আমার অনেক আছে।
তাছাড়া নুসরাত ক্লাসের ভালো একটা মেয়ে তাকে পড়াতে কোন বেতন লাগবে না।
আমার পরিবার বলতে আমি আর আমার বাবা মা ছোট একটা ভাই আছে।
বাবার বড় ব্যবসা আছে, শহরে আমাদের কয়েকটা ফ্ল্যাট আছে।
এখানে যে বেতন পাই এগুলো দিয়েই রাজার মত জীবন পার হয়ে যায় আমাদের।
রিপাঃ তারপরও বেতন ছাড়া পড়াবেন এটা কেমন দেখায় আর নুসরাতের বাবা কে বা কি বলবো। বেতন আপনাকে নিতেই হবে যতই আপনার থাকুক।
শিক্ষকঃ বেতন হিসাবে অন্য চাই সেটা পেলে বেতন লাগবে না।
আর নুসরাতের বাবা কে বলবেন একটা বেতনের কথা হয়ে গেলো।
রিপাঃ বেতন হিসাবে অন্য কিছু মানে( অবাক হয়ে) কি সেটা বললে ভালো হয় আমি চেষ্টা করবো দিতে।

শিক্ষকঃ বেতন হিসাবে আপনার হাসি চাই।
যখনই দেখা হবে মন খারাপ চেহারা আপনার দেখতে পারবো না।
আপনি আমার সামনে এমন হাসি মুখে থাকলেই হবে।
রিপাঃ এটা কোন কথা হলো কেউ কি সব সময় হাসি খুশি থাকতে পারে।
আপনি কি একটা অদ্ভুত কথা বলেন দেখেন তো। সব সময় কি হাসতে পারবো বলেন।
শিক্ষকঃ ঠিক আছে হাসতে না পারলে আমিও পড়াতে যেতে পারবো না নুসরাত কে।
রিপা একবার ভাবে অনেক কষ্টে একজন কে পেলাম।
বেতন ছাড়া পড়াতে চায় এখন যদি না করি তাহলে কি শিক্ষক আর পাবো তাছাড়া নুসরাত কে মানুষ করতে হবে। সে যাই হোক রাজ হয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
রিপাঃ আরে আরে রাগ করেন কেনো।
আমি রাজি আছি আপনার সামনে মন খারাপ করে আসবো না
আর হাসি মুখে থাকবো এবার ঠিক আছে( কিছুটা হেসে)
শিক্ষকঃ হ্যাঁ এবার ঠিক আছে, কিন্তু আপনার নাম টা জানাই হলো না।
রিপাঃ আমার নাম হলো রিপা। যদি কিছু মনে না করেন আপনার নাম টা কি জানতে পারি?
শিক্ষকঃ মনে করার কি আছে আমার নাম হলো রাহাদ।
রিপাঃ তাহলে কবে থেকে পড়াতে চাচ্ছেন?

রাহাদঃ আপনি বললে আজকে দুপুরের পরই নুসরাত কে পড়াতে যেতে পারি। আর যদি আপনার সমস্যা থাকে তাহলে কিছুদিন পর যাই।
রিপাঃ না না আমার কোন সমস্যা নাই আপনি আজকে থেকেই আসুন তাহলে।
রাহাদঃ আপনি এত সুন্দর আর এত সুন্দর করে কথা বলেন আপনার কথা কি না রেখে পারি আমি।
রিপাঃ কি যে বলেন না আপনি, কৈ আমি সুন্দর আপনার চোখে সমস্যা আছে মনে হয়।
রাহাদঃ আপনাকে মিথ্যা বলে কি আমার কোন লাভ আছে বলেন?
সত্যি আপনার হাসিটাও অনেক সুন্দর আপনাকে দেখে তো মনেই হয় না আপনি এক বাচ্চা মা।
রিপাঃ আপনি দেখি অনেক মেয়ে পটানো কথা বলতে পারেন।
আপনার সাথে যেকোন মেয়ে কিছুক্ষণ থাকলে তো আপনার কথার জালে ফেঁসে যাবে।
তা আপনি কি ক্লাসেও এরকম করেন নাকি রোমান্টিক কথা।
রাহাদঃ বাংলা শিক্ষক আমি একটু রোমান্টিক না হলে কি চলে। আর আমি কেনো কথার জালে ফাঁসাবো বলেন? যেটা সত্যি সেটাই আমি সব সময় বলি।
রিপাঃ হুমম বুঝতে পেরেছি, তা এবার আপনি একটা বিয়ে করে নেন।
বউয়ের সাথে এমন রোমান্টিক কথা বলবেন কেমন।

রাহাদঃ আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে সত্যি বিয়ে করতাম।
আপনার মত তো এখনও কাউকে পেলাম না তা বিয়ে করি কি করে?
রিপাঃ আমি সুন্দর না ছাই, আর আমার কি এমন রুপ আছে সুন্দরী
বলেন আবার আমার মত মেয়ে খুঁজেন? আমার চেহারা তো আহা মরি কিছুই নাই।
রাহাদঃ আপনি মনে হয় সত্যি আয়না দেখেন না।
আপনার চোখ দুটো হরিণীর মত নাক টা খরগোরসের মত হাসলে ঠোল পড়ে চেহারায় মায়াবী একটা ভাব আছে বুঝলেন। এরকম মেয়ে কি সবার কপালে থাকে বলেন?
রিপাঃ এতটুকু সময়ের মধ্যে এত কিছু পরখ করে নিলেন আপনি।
বাপ রে মানতে হবে আপনার যে বউ হবে আপনার কথা শুনে সারাদিন পার করে দিবে না খেয়ে।
রাহাদঃ আপনি যা বলছেন ততটাও রোমান্টিক কথা বলতে জানি না আমি।
তবে যা সত্যি আর যে ভালো সেটা বলতে আমার কোন দ্বিধা নেই বুঝলেন।
রিপাঃ হুমম বুঝেছি এখন এসব কথা বাদ দেন নুসরাতের দিকে একটু নজর রাখিয়েন।
ওর বাবা দাদু আর আন্টি ওকে খুব ভালোবাসে বুঝলেন।
রাহাদঃ একবার যখন দায়িত্ব নিয়েই নিলাম তখন নিজের সন্তানের মত নজর রাখবো আর আপনাকে কথা দিতেছি একমাসের মধ্যে নুসরাত আগের চেয়েও ভালো পড়াশোনা পারবে ক্লাসের টপার হবে।
রিপাঃ আপনার কথা শুনে মনে একটু শান্তি পেলাম আমি।

জানেন না এই কয়দিনে নুসরাত কে নিয়ে যা টেনশন হয়েছে আপনাকে আর কি বলবো।
রাহাদঃ এখন আমি এসে গেছি আপনার আর কোন টেনশন নাই।
এখন থেকে আপনি ঠিক এরকম হাসি মুখে থাকবেন।
রিপাঃ আপনি না থাকলে আরো যে কত টেনশন করা লাগতো একটা শিক্ষকের জন্য।
রাহাদঃ বাদ দেন এসব কথা এখন। আর এক কাপ করে চা হবে নাকি?
রিপাঃ চায়ের বিল কিন্তু আমি দিবো।
রাহাদঃ আচ্ছা আচ্ছা লেডিস্টি ফাস্ট। চা শেষ হতে হতে স্কুল ছুটি হবে।
আরো এক কাপ করে চা নিয়ে রাহাদ আর রিপা দুজনে গল্প করতে করতে পান করলো।
রাহাদ কে রিপার ভালোই পছন্দ হলো অনেক রশিক আছে রাহাদ।
চা শেষ হলে স্কুল ছুটি হলো। রিপা নুসরাত কে নিয়ে বাড়ি ফিরলো।
বাড়ি ফিরেই ইমরান ঈশিতা আর তার শ্বশুর কে বললো নুসরাতের জন্য মাষ্টার পেয়ে গেছে। তিনিই নুসরাতের ক্লাস শিক্ষক। সবাই শুনে খুব খুশি হলো,
তারপর রিপা বললো আজকেই নুসরাত কে তিনি পড়াতে আসবেন।
তারপর শিক্ষকের সব শর্তের কথা বলবো শুধু বেতন বাদে আর কিভাবে তাকে পেলো সেটাও বলল।
সবাই রিপা কে ঠিক আগের মতই বললো সত্যি তুমি আছো বলে সব ঠিকঠাক চলতেছে।
খেলা জমে গেছে পাঠক পাঠিকা গন, এখন থেকে আসল কাহিনি শুরু।
শীতের সময় লিখতে যা কষ্ট কি আর বলবো গাড়ি চালিয়ে এসে লেখা হাত খালি কাঁপে।

চলবে ..

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url